ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ , ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সবাইকে জুলাই সনদ সইয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হওয়ার আহ্বান ৯টি খাবারের মাধ্যমে শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে পারেন সামান্থা, তামান্না, রাকুলের ‘ভোটার কার্ড’, জুবিলি হিল্‌স-এর উপ-নির্বাচনের আগে কী ঘটল নায়িকাদের সঙ্গে? রাকসু: মুন্নুজান হলের ফল ঘোষণা, ভিপি পদে এগিয়ে শিবির সমর্থিত প্রার্থী জুলাই সনদ স্বাক্ষর, চূড়ান্ত মুহূর্তেও অনিশ্চয়তা ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন হযরত ও হেনা শেষ পর্যন্ত তায়কোয়ানডো ক্যাম্প থেকে ছিটকে গেলেন স্বর্ণজয়ী দিপু চাকমা পুঠিয়ায় প্রকাশ্যে চলছে মাদক ব্যবসা, নির্বিকার প্রশাসন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সাংবাদিক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ লালপুরে ৮ম উপজেলা কাব ক্যাম্পুরীর উদ্বোধন সার সংকট হলে প্রয়োজনে ডিসি অফিস ঘেরাও করবেন- নিজ নির্বাচনী এলাকায় ফখরুল নিয়ামতপুরে ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন নওগাঁ জেলায় ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল এত অপকর্মের সাথে জড়িত বায়তুল মসজিদের খতিব পর্যন্ত পালিয়ে গেছে: মির্জা ফখরুল মোহনপুর কেশরহাটে যুবদলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত তানোরে আবারো শীর্ষে কলমা আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে আটক ১২ ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত গ্রেপ্তার নোয়াখালীতে লাঠিখেলা-লোকগানে বিএনপির ৩১ দফা প্রচার হৃদয়ে পাবনার আয়োজনে ৬ দিনব্যাপি পাবনা উৎসব ও উদ্যোক্তা মেলা শুরু হয়েছে

জুলাই সনদ স্বাক্ষর, চূড়ান্ত মুহূর্তেও অনিশ্চয়তা

  • আপলোড সময় : ১৭-১০-২০২৫ ১২:০৬:২৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-১০-২০২৫ ১২:০৬:২৬ পূর্বাহ্ন
জুলাই সনদ স্বাক্ষর, চূড়ান্ত মুহূর্তেও অনিশ্চয়তা ছবি: সংগৃহীত
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আট মাস ধরে কয়েক দফায় সংলাপের পর রাষ্ট্র সংস্কারে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জুলাই সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। এজন্য সব প্রস্তুতি যখন শেষ তখনও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। বেশ কয়েকটি দল প্রস্তাবিত সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। কয়েকটি দলের সিদ্ধান্ত এখনো পরিষ্কার নয়।

রাষ্ট্রীয় সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্যায়ে চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩২টি দল ও জোটের সঙ্গে কমিশনের মোট ৪৪টি বৈঠক হয়। যাতে ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টির বিষয়ে ঐক্য হয়। দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে সংবিধান সংশ্লিষ্ট মৌলিক ১৯টি সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়; যার ১০টিতেই নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

৬টি সংস্কার কমিশনের যে ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ, তার মধ্যে ৪৭টি বিষয়কে ‌‌‘সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে সংস্কার’ এবং বাকি ৩৭টি বিষয়কে ‘আইন/অধ্যাদেশ, বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কার’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে ঐকমত্য কমিশন। জুলাই সনদের পটভূমি ব্যাখ্যা করে সংস্কারযজ্ঞ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম তুলে ধরার পর সংস্কারের ৮৪ দফা তুলে ধরা হয়েছে ৪০ পৃষ্ঠার সনদে।

গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরে ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে। ৯ অক্টোবর এই আলোচনা শেষ হয়। আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য হয়।
 
কিন্তু, বিপত্তি বেধেছে সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া, গণভোটের ভিত্তি এবং সময় নিয়ে। ৬টি বৈঠকেও এ বিষয়ে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি কমিশন।
 
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের যে চূড়ান্ত কপি পাঠিয়েছে, তার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে অধিকাংশ দলই একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাবের বিষয়ে ভিন্নমত রয়ে গেছে। জুলাই জাতীয় সনদে সেগুলো যুক্ত করা হয়েছে ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ।

তবে, এই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, সেই বিষয়ে আলাদা করে কোনো সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়নি জুলাই সনদে। যদিও জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়েই বাস্তবায়ন করবে অন্তর্বর্তী সরকার।

সনদ স্বাক্ষরের আগে চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছাতে বুধবার সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘অতি জরুরি’ বৈঠক ডাকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এই কমিশনের প্রধান। তিনি এসময় আশা প্রকাশ করেন, শুক্রবার রাজনৈতিক দলগুলো উৎসবমুখর পরিবেশে জুলাই সনদ স্বাক্ষর করবে।

কিন্তু সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগের রাতেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অন্যথায় তারা স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে। নির্বাচনের আগেই গণভোট এবং পিআর পদ্ধতি নিয়ে অনড় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলো। তবে, সনদ স্বাক্ষর করার ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।

বুধবার ঐকমত্য কমিশনের ডাকা ‘অতি জরুরি’ বিএনপির পক্ষ থেকে অংশ নেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সেখানে তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, এখন স্বাক্ষরের অপেক্ষায়।... আমরা ধীরে ধীরে এমন এক অবস্থায় এসেছি, যেখানে সকল দল ঐক্যবদ্ধ। আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) নেতৃত্বে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে, আজ আমরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে মতামত বিনিময় করে একমত হতে পারছি।

জুলাই জাতীয় সনদকে দেশের রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রতিফলন হিসেবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, নোট অফ ডিসেন্ট বা মতবিরোধ থাকা স্বাভাবিক, কারণ সব প্রস্তাবে একমত হওয়া সম্ভব নয়। তবে সনদে স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন বিলম্বিত হলে জাতির জন্য তা ক্ষতিকর হবে।
 
বৃহস্পতিবার আলাদা অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে কথা বলেছেন।

রিজভী বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করলে দেশের আকাশ কালোমেঘে ছেয়ে যাবে।
 
আর ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে এক পথসভায় মির্জা ফখরুল বলেছেন, পিআর না হলে সনদে সাক্ষর করবে না বলে একটা দল সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। বিএনপি সে কথা বলছে না, বিএনপি সংস্কার ইস্যুতে অত্যন্ত ইতিবাচক। অবশ্যই সনদে সাক্ষর করবো, যদি বিএনপির দেয়া নোট অব ডিসেন্ট লিপিবদ্ধ থাকে।

গণভোটতো বিএনপি মেনে নিয়েছেন। একটু অপেক্ষা করুন। অস্থির হয়েন না, টেনশন থাকা ভালো। কালকের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবে তারা, তবে সই করবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সেমিনারে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার শুধুমাত্র ঐকমত্য হওয়া সুপারিশগুলো গণভোটের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানা। বলেন, গণভোট আর জাতীয় নির্বাচন একই দিনে হলে গুরুত্ব হারাবে গণভোট। তাই নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট দিতে হবে। এ ছাড়াও উভয় কক্ষে পিআর দিতে হবে। গণভোট ছাড়া এ দাবিকে অবমূল্যায়ন করার সুযোগ নেই।

সংস্কারকাজ বিষয়গুলো আগামী সংসদ অধিবেশন এবং আদালতে নিয়ে যাওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রের বীজ বুনেছিলো একটি দল। ঐকমত্য কমিশন আর সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচেষ্টায় তা ধোপে টেকেনি।

এনসিপি জানিয়েছে তিনটি দাবি পূরণ না হলে তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না। দাবির মধ্যে রয়েছে–
 
এক, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগেই প্রকাশ করতে হবে। এটি "জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়" অনুসারে সরকার প্রধান হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন। জুলাই সনদের বৈধতার উৎস হতে হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান।

দুই, জুলাই সনদের ৮৪টি সংস্কারের বিষয়ে গণভোট হবে। এতে নোট অব ডিসেন্টের আলাদা কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। গণভোটের প্রশ্ন কী হবে তা আগেই চূড়ান্ত করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে দেখাতে হবে।

তিন, গণভোটের মাধ্যমে জনগণ যদি জুলাই সনদের পক্ষে রায় দেয়, তবে 'নোট অব ডিসেন্ট' এর কোনো কার্যকরিতা থাকবে না; গণভোটের রায় অনুযায়ী আগামী নির্বাচিত সংসদ তাদের ওপর প্রদত্ত সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে সংবিধান সংস্কার করবে এবং সংস্কারকৃত সংবিধানের নাম হবে 'বাংলাদেশ সংবিধান, ২০২৬'।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এই বিষয়গুলো নিশ্চিত না করে জুলাই সনদ সই করা হলে তা জনগণের সঙ্গে 'ছলচাতুরি' করা হবে।
 
ঘোষণাপত্রের টেক্সট নিয়ে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে। সেই টেক্সটটা আমাদের দেখানো হয়নি। আগে যে অংশ দেখানো হয়েছে, ঘোষণাপত্র পাঠের সময় সেটা পরিবর্তন হয়েছিল। সেটা অনেক কম্প্রমাইজড একটা ডকুমেন্ট হয়েছে, বলা হয়েছে সংসদে সেটা ঠিক হবে। আরেকটা এরকম ঘটনার সাক্ষী হতে চাই না।

এদিকে জুলাই জাতীয় সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে সংশোধিত খসড়া না পেলে স্বাক্ষর করবে না বাম ধারার চারটি দল। দলগুলো হলো- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।
 
দলগুলো কেন জুলাই সনদে সই করবে না, তার কারণগুলো বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরে দলগুলো। বলা হয়, জুলাই সনদের প্রথম অংশে পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি, বারবার সংশোধনী দিলেও সেগুলো সন্নিবেশিত করা হয়নি।

বুধবারের বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই সনদ নিয়ে বলেছিলেন, ‘যে অসাধ্য সাধন হয়েছে, কেউ চিন্তা করে নাই যে শেষ পর্যন্ত এটা হবে।’
সবার বক্তব্যের শেষে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত রাজনীতিবিদদের ধন্যবাদ দেন ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, যে অসম্ভবকে আপনারা সম্ভব করেছেন এটা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয় পৃথিবীর পলিটিক্যাল সিস্টেমের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে।... নিজেরা সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছেন একটা ঐকমত্যে পৌঁছতে, আপনারা পেরেছেন। যে কারণে আজকে জুলাই সনদ রচনা হয়েছে।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, শুক্রবার উৎসবমুখর পরিবেশে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হবে।

বৃহস্পতিবার কয়েকটি দলের বক্তব্যে অনিশ্চয়তা ফুটে ওঠার পর সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের এল ডি হলে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় আছি আগামীকাল (শুক্রবার) সবাই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সনদে স্বাক্ষর করবেন। মতভিন্নতা সত্ত্বেও সবাই অংশ নেবেন বলে আশা করি।’

আমরা চাই কালকেই সবাই স্বাক্ষর করুন। তবে কোনো রাজনৈতিক দল যদি পরে স্বাক্ষর করতে চায়, সেটাও করতে পারবে।

তৃতীয় দফায় আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কমিশনের মেয়াদের মধ্যেই সরকার সনদ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক রীয়াজ।
 
তিনি জানান, অঙ্গীকারের পাতায় প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করবে, এরপর কমিশনের সদস্য এবং সবশেষে প্রধান উপদেষ্টা স্বাক্ষর করবেন।

জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন, এনসিপিও অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এতে স্বাক্ষর করবে এবং বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

জুলাই সনদ স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে সেটাকে রাজনৈতিক দলগুলোর দর কষাকষির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ড. ছিদ্দিকুর রহমান।

রাজনৈতিক দলগুলো এই দর কষাকষির মধ্য দিয়ে সরকারের কাছ থেকে তাদের চাওয়াগুলো যতোটা আদায় করতে পারে সেই চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, রাতে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে আমরা ধারণা করেছিলাম, শুক্রবার রাজনৈতিক দলগুলো মতানৈক্য কাটিয়ে জুলাই সনদের স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। কিন্তু আজকে এনসিপির সংবাদ সম্মেলন দেখলাম। এতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা এবং আইনি ভিত্তি আগেই চাওয়া হচ্ছে। তাহলে তো গণভোটের দরকার পড়ে না। তারা আজকে নতুন করে বলছে, এই সংবিধানের নাম হবে বাংলাদেশের সংবিধান, ২০২৬। কিন্তু সংবিধান তো নতুন করে প্রণীত হচ্ছে না। বিদ্যমান সংবিধানের কিছু সংশোধোনীর মাধ্যমে এটা হচ্ছে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং নতুন কিছু ইস্যু তৈরি করে যদি এটাকে প্রলম্বিত করা হয় তাহলে দেশের মানুষ সেটা সহজভাবে নেবে না এবং দীর্ঘমেয়াদে সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হবে বলে মনে করেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক। সেই সংকট থেকে উত্তরণের সক্ষমতা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মানুষের আছে কিনা সেটাও রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবতে হবে বলেও পরামর্শ দেন তিনি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Admin News

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন হযরত ও হেনা

ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন হযরত ও হেনা